মুখে ব্রণ হলে করণীয় কি

মুখে ব্রণ হলে কিছু সাধারণ করণীয় আছে যেগুলি আপনি অনুসরণ করতে পারেন: 


  1. মুখ পরিষ্কার রাখা: দিনে দুইবার মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন। একটি অল্প পরিমাণ মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করুন, যেটি ত্বককে আঘাত না করে পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে।
  2. খাবারে পরিবর্তন: চকলেট, তেলমশলা, ফাস্টফুড ইত্যাদি কম খান, কারণ এগুলি ব্রণের সৃষ্টি করতে পারে। তাজা ফল, সবজি এবং প্রচুর পানি খেতে চেষ্টা করুন।
  3. চেপে না ধরুন: ব্রণগুলোকে চাপ দিয়ে বের করার চেষ্টা করবেন না, কারণ এটি ইনফেকশন বা দাগ সৃষ্টি করতে পারে।
  4. স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস: এমন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন যা অয়েল ফ্রি এবং ব্রণের জন্য উপযুক্ত। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পেরক্সাইডযুক্ত পণ্য কার্যকর হতে পারে।
  5. স্ট্রেস কমানো: স্ট্রেসের কারণে ব্রণ বৃদ্ধি পেতে পারে, তাই মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
  6. ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ: যদি ব্রণ খুব বেশি বা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে, তবে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন। তারা চিকিৎসা বা স্কিন কেয়ার রেগিমেন দেয়ার মাধ্যমে সাহায্য করতে পারেন।

এই ধাপগুলি অনুসরণ করলে অনেক সময় ব্রণ কমে আসে, তবে যদি সমস্যা তীব্র হয়, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা ভালো।


অতিরিক্তভাবে, ব্রণ কমানোর জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ রয়েছে যা আপনি অনুসরণ করতে পারেন:

  1. টপিক্যাল মেডিকেশন ব্যবহার: অনেক সময় ডার্মাটোলজিস্টরা গ্যামকর্মিক্যাল পদার্থ যেমন রেটিনয়েডস বা অ্যান্তিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। এগুলি ত্বকের মধ্যে প্রবাহিত তেল এবং ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমাতে সহায়তা করতে পারে।
  2. আল্ট্রা-ভায়োলেট (UV) রশ্মি থেকে রক্ষা: সূর্যের আলো ত্বকের সমস্যাকে বাড়াতে পারে, তাই সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রোটেক্টিভ ক্রিম বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। এটি ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এবং অতিরিক্ত তেল তৈরির প্রবণতা কমাতে সহায়তা করে।
  3. হরমোনাল পরিবর্তন: মহিলাদের ক্ষেত্রে, ঋতুচক্রের সময় হরমোনের পরিবর্তন ব্রণ বাড়াতে পারে। এই ক্ষেত্রে, হরমোনাল চিকিৎসা যেমন পিল বা ইনজেকশনের মাধ্যমে হরমোন নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
  4. অলিভ অয়েল বা Tea Tree Oil ব্যবহার: অলিভ অয়েল বা ট্রি ট্রি অয়েলের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ থাকে, যা ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে। তবে ব্যবহার করার আগে হালকা অ্যালার্জি পরীক্ষা করা ভালো।

  • মেকআপ পরিহার: ব্রণ থাকলে মেকআপ পরা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন, কারণ মেকআপ পণ্যগুলো ত্বকের ছোট ছোট রোমকূপ বন্ধ করতে পারে, যা ব্রণ বৃদ্ধি করতে পারে। যদি মেকআপ ব্যবহার করতে হয়, তাহলে নন-কমেডোজেনিক (non-comedogenic) পণ্য ব্যবহার করুন।
    1. সঠিক ঘুম বিশ্রাম: ঘুমের অভাব এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম ব্রণ বাড়াতে পারে, তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: সুস্থ খাবার এবং জীবনযাপন থেকে আপনার শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী থাকবে, যা ত্বককে সুস্থ রাখতে সহায়ক।

    আরও কিছু উপায় আছে যা আপনি ব্রণ কমানোর জন্য অনুসরণ করতে পারেন:

    ব্রণ কমানোর জন্য মাস্ক:

    • টমেটো মাস্ক: টমেটোতে প্রাকৃতিক অ্যাসিড থাকে, যা ত্বককে উজ্জ্বল এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। টমেটো কেটে তার রস ত্বকে লাগান এবং 15-20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
    • মধু এবং দারচিনি মাস্ক: মধু একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, আর দারচিনি ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। মধু দারচিনি মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে ব্রণযুক্ত স্থানে লাগান এবং 15-20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
    1. নির্দিষ্ট ব্রণ চিকিৎসা:
    • বেনজোইল পেরক্সাইড: এটি এক ধরনের স্কিন কেয়ার উপাদান যা ব্রণ কমাতে সহায়তা করে। এটি ত্বকের মরা কোষ অপসারণ করে এবং ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে।
    • সালিসাইলিক অ্যাসিড: এটি একটি এক্সফোলিয়েটর যা ত্বকের অবশিষ্ট মৃত কোষ সরিয়ে ব্রণ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি ব্রণ প্রভাবিত স্থানগুলোতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
    1. ডায়েট অ্যান্ড নিউট্রিশন:
    • অমেগা- ফ্যাটি অ্যাসিড: মাছ, বাদাম এবং অন্যান্য ওমেগা- সমৃদ্ধ খাবার ত্বককে হেলদি রাখতে সাহায্য করতে পারে। এটি ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করে, যা ব্রণ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
    • ভিটামিন : ভিটামিন ত্বককে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই ভিটামিনটি গাজর, কুমড়া, শাকসবজি ফলমূল থেকে পাওয়া যায়।
    1. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট:
    • যোগা বা মেডিটেশন: স্ট্রেস ব্রণের অন্যতম কারণ হতে পারে। যোগা, মেডিটেশন, বা শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন যাতে মানসিক চাপ কমানো যায়।
    • অতিরিক্ত কাজের চাপ কমানো: যদি আপনি অতিরিক্ত চাপের মধ্যে থাকেন, তবে বিশ্রাম নেওয়া, কিছুটা সময় কাটানো বা শখের প্রতি মনোযোগ দেওয়া ত্বককে উপকারি হতে পারে।
    1. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:
    • কখনোই ত্বকে হাত দেবেন না: মুখে হাত দেওয়ার ফলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া প্রবাহিত হতে পারে, যা ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে। তাই এটি এড়িয়ে চলুন।
    • ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা ত্বককে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং ব্রণ কমাতে সহায়তা করে।
    1. প্রাকৃতিক উপাদান এবং অয়েল:

    • লোটাস অয়েল বা লেবুর রস: লেবুর রসের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ থাকে, যা ব্রণ কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে এটি খুব বেশি ত্বকে লাগানো উচিত নয়, কারণ এটি ত্বক শুষ্ক করতে পারে।
    • অ্যালো ভেরা: অ্যালো ভেরাতে সেলফ-হিলিং প্রপার্টিজ থাকে, যা ত্বককে শান্ত করতে এবং ব্রণ সারাতে সাহায্য করতে পারে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করা যেতে পারে।

    পুর্বের পোস্ট পরবর্তী পোস্ট